ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় মোরশেদ হত্যা মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে বাদীকে হুমকি, একজনকে পুলিশে সোপর্দ

ovijog_1চকরিয়া অফিস :
চকরিয়ায় আলোচিত কলেজ ছাত্র মোঃ মোরশেদ আলী হত্যা মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরছে। তারা নিহতেরে পরিবারের সদস্যদের প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল ৯ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৫টায় স্থানীয় জনতা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত জসিম উদ্দিন(৩০) নামের একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়েছে। তাকে গ্রেফতার করায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। মোঃ মোরশেদ আলীর মা অভিযোগ করেছেন, তার ছেলের হত্যাকান্ডে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত রয়েছে। হুমকি ধামকির কারণে তাদেরকে এজাহারভুক্ত আসামী করা যায়নি। তিনি তদন্ত করে জড়িত সব প্রভাবশালী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে আহবান জানিয়েছেন। গতকাল নিহত কলেজ ছাত্র মোঃ মোরশেদ আলী’র মা মুজিবুন্নেছা বেগম প্রকাশ ঝিনু স্থানীয় সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
চকরিয়া বরইতলী ইউনিয়নের চাঁদের বাপের পাড়ার ডা. আলী হোসেনের স্ত্রী মুজিবুন্নেছা বেগম প্রকাশ ঝিনু জানান, একই ইউনিয়নের বানিয়ারছড়ার মোহাম্মদ নগর পাহাড়িয়া এলাকায় তাদের কিছু ভোগদখলীয় জমি আছে। সেখানে তাদের বসত ঘরও রয়েছে। তার ছেলে মোঃ মোরশেদ আলী ওই এলাকায় একটি মসজিদ দিয়েছেন। সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য নিজ খরচে রাস্তাও করে দিয়েছেন। মোরশেদ আলী সব সময় এলাকার মানুষের পক্ষে কাজ করে থাকেন বলে এলাকায় তার জনপ্রিয়তা রয়েছে। এসব দেখে একটি প্রভাবশালী মহল তার উপর ঈর্ষান্বিত হয়ে উঠে।  চকরিয়া পৌরসভার চিরিঙ্গার এক প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং স্থানীয় অপর এক প্রভাবশালী ব্যক্তি তার বসত ঘর, মসজিদ ও ভোগদখলী জমি জবর দখল করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে পায়তারা করে আসছে। গত ৩ মার্চ সন্ধ্যা ৬টা ৫মিনিটের সময় ওই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ঈন্ধন ও সহযোগিতায় স্থানীয় ২৯-৩০ জন সন্ত্রাসী তার ছেলে চকরিয়া বিশ্ব বিদ্যালয় কলেজের বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোঃ মোরশেদ আলীকে উপর্যোপুরি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন ও তার মা অন্যান্য আত্মীয়স্বজন এগিয়ে গিয়ে তাকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যায়। এ ঘটনায় নিহত মোঃ মোরশেদ আলীর মা মুজিবুন্নেছা বেগম প্রকাশ ঝিনু বাদী হয়ে ঘটনার সাথে জড়িত ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে ২৯ জনের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মুজিবুন্নেছা বেগম প্রকাশ ঝিনু জানান, তার ছেলে আহত হওয়ার পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পথে হত্যাকান্ডে জড়িতদের নাম বলতে পেরেছে। কিন্তু মামলা করার সময় নানা ভাবে তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে। এমন কি প্রভাবশালী যারা তার ছেলে মোঃ মোরশেদের ভোগদখলীয় জমি জবর দখল করার জন্য এ ঘটনা করিয়েছে হুমকি ধামকির কারণে তাদেরকে মামলায় আসামী করতে সাহস করেননি। এখন ওই প্রভাবশালী ব্যক্তিরাই তাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে। তাছাড়া প্রধান প্রধান আসামীরা এখন এলাকায় প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণ নাশের জন্য তাকে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। এসব কথা তিনি গত ৩০ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবেও সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন বলে জানিয়েছেন। মুজিবুন্নেছা বেগম প্রকাশ ঝিনু——–, প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যে কোন সময় তার ক্ষতি করতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অভয় পেলে প্রভাবশালী ব্যক্তি যারা এ হত্যাকান্ডে ঈন্ধন ও সহযোগিতা দিয়েছেন তাদের নাম বলবেন বলে জানিয়েছেন। গতকাল ৯ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৫টায় স্থানীয় জনতা মোঃ মোরশেদ আলী হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত জসিম উদ্দিন(৩০) নামের একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়েছে। তাকে গ্রেফতার করায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। তবে জসিম উদ্দিনকে আটক করে পুলিশে দেয়ায় পুলিশ তাকে উল্টো শাসিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মুজিবুন্নেছা বেগম প্রকাশ ঝিনু। গ্রেফতারকৃত জসিম উদ্দিন ওই এলাকার মৃত আবদুস ছোবাহানের পুত্র বলে জানা গেছে। পুলিশের চকরিয়া সার্কেলের এএসপি মাসুদ আলম—–জসিম উদ্দিনকে গ্রেফতারের কথা নিশ্চিত করেছেন। মুজিবুন্নেছা বেগম প্রকাশ ঝিনু জানান, পুলিশ ৪ নং আসামী সাহাব উদ্দিন ও ৯ নং আসামী মোঃ নেজাম উদ্দিনকে গ্রেফতার করলেও অন্যান্য আসামী এলাকায় প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তিনি তার ছেলে মোঃ মোরশেদ আলী হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার করে সুষ্টু বিচারের দাবী জানান। এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খান জানান; জসিম উদ্দিন এ মামলার এজাহার ভূক্ত আসামী নয়। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে জিড়ি করেছিল। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: